Breaking News

কালাইয়ে আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা কৃষক,সিন্ডিকেট রোধে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন | N NEES 24

জাহিদুল ইসলাম জাহিদঃ

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে আলু উৎপাদনে শীর্ষে।

এবার আলু বীজের চড়া দামে বিপাকে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা।আগাম জাতের আলু চাষের মৌসুম শুরু হলেও আলু বীজের চড়া দাম হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন  প্রান্তিক কৃষকরা।তাদের অভিযোগ, ন্যায্যমূল্যে বীজ ও সার পাচ্ছেন না তারা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে আলু বীজের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি নিচ্ছে। একইভাবে সারের দামও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এতে চাষে উৎপাদন খরচ বাড়ছে।

কালাই উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়,১০ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।

সরকারী ডিলার পর্য়ায়ে আগাম জাতের আলু বীজের সরবরাহ না থাকায় বাজারে বীজের দাম লাগাম হীন হয়েছে।অবস্থা এমন থাকলে এবার মৌসুমী আলু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রাও ব্যাহত হতে পারে। মুল্য বৃদ্ধিতে বীজ সিন্ডিকেটের কথাও ইঙ্গিত করছেন কেউ কেউ।কারণ মৌসুমে যে আলু কৃষকের নিকট থেকে ব্যবসায়ীরা ১৫ টাকা করে নিয়েছিল,সেই আলুই রোপন মৌসুমে কৃষকদের নিকটই ৭৫/৮৫ দরে বিক্রি করছে।মুলত এটি একটি সিন্ডিকেটের কারসাজি বলে ধারণা করছেন কৃষকরা।এ ছাড়া উপজেলার১০টি হিমাগারে বিপুল পরিমাণ আলু সংরক্ষিত থাকে।তারা চাহিদার তুলনায় কম আলু হিমাগার থেকে বের করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বৃদ্ধি করছে।এসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদারকি নেই বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

স্থানীয় কৃষকরা বলেন, তারা সরকার বা কোম্পানির নির্ধারিত দামে আলুবীজ পাচ্ছেন না। বেশি দামে তাদের বীজ ও সার কিনতে তারা বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকরা দাবি করছেন, এই সিন্ডিকেট ভাঙা প্রয়োজন। অন্যথায় তারা আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন।

তিন ফসলী জমিতে কৃষকরা আগাম আলু রোপনের জন্য আগাম জাতের আমন ধান আবাদ করেছেন।কিন্ত এবার আগাম আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।বাজারে খাবার আলু ৫৫/৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০থেকে ৮৫ টাকা দরে। হিমাগারে যে সব বড় কৃষক আল বীজু মজুদ করে রেখেছে তাদের অসুবিধা না হলেও প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের আগাম জাতের আলু বীজ কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।ব্র্যাক ও এসিআই সহ বিভিন্ন কোম্পানিতে আগাম বুকিং দিয়ে রাখলেও প্রতি কেজি আগাম জাতের বীজ আলুর দাম পড়ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি বিঘা আলু বীজের দাম পড়ছে প্রায় ২০ থেকে ২১ হাজার টাকা।গত বছর যা ছিল অর্ধেক।এছাড়া রয়েছে আলু রোপন পরিচর্চা, কীটনাশক এবং উত্তোলন পর্যন্ত সব মিলিয়ে বিপুল খরচ।এর পর যদি আবহাওয়া বৈরী হয় এবং মুল্য পতন ঘটে তাহলে কৃষককে পথে বসতে হবে।

আগাম জাতের আলু গুলো হচ্ছে,ডায়মন্ড, ক্যারেজ, শাহিন, কাটিনাল।যা রোপনের ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে এসব উত্তোলন করে বোরো ধানের আবাদ করতে পারবে কৃষক।

আহম্মেদাবাদ  ইউনিয়ন ঝামুটপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব বলেন,তিনি এবার ৮ বিঘার অধিক জমিতে আলু চাষ করবেন। তবে এবার বীজের চাহিদা বেশি হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে তাই দামও প্রচুর বেড়ে গিয়েছে।

এ উপজেলার আরেক কৃষক রাশিদুল আলম বলেন,এবার ১০ বিঘা জমিতে আলু লাগাবো। তবে আলু বীজের বেশি দাম হওয়ায় এবারে আলু চাষে বিঘা প্রতি অনেক টাকা খরচ হবে।

এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএডিসি) এর বীজ ডিলারদের মাধ্যমে উপজেলায় ৩৯ জন ডিলার সরকারী মুৃল্যে মৌসুমি বীজ সরবরাহ করবে। ষ্টিক জাতের আলু বীজ ৬৫ টাকা কেজি দরে আগে আসলে আগে পাবে ভিত্তিতে কৃষক নিতে পারবে। এসব বীজ রোপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মাথায় আলু উত্তোলন করা যায় ।

বিএডিসির বীজ ডিলার মোঃ মোস্তফা বলেন, কৃষকের চাহিদা না থাকলে সব ডিলার বীজ উত্তোলন করেনা। তবে কৃষক চাইলে ডিলাররা সরকারী মুল্যে আলু বীজ দিতে বাধ্য।

কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, বীজের দাম বেশি হলেও আলু উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা পুরণ হবে বলে আশা করছি।তিনি আরও বলেন, এবার বাজারে বীজ আলুর কোনো সংকট নেই। যদি কেউ বেশি দামে বীজ বিক্রি করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ জন্য আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি।

No comments

গাইবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যানকে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন | N NEWS 24

  গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানসহ বালু মহাল প্রতিরোধ কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচা...