ধামইরহাটে দুর্গাপূজা: ৩০টি মন্ডপে উৎসবমুখর আয়োজন, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা | N NEWS 24
মো: এ কে নোমান, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে, যা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ধামইরহাট উপজেলায় এবারে ৩০টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। মন্ডপগুলোতে চলছে জাঁকজমকপূর্ণ প্রস্তুতি, প্রতিমা পূজা, আর ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা। পূজা ঘিরে উপজেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ, ভক্তরা ভিড় করছেন মন্ডপে মন্ডপে।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাইসুল ইসলাম জানান, “আমরা প্রতিটি মন্ডপে নিরাপত্তার জন্য ২০৬ জন আনসার সদস্য এবং স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের মোতায়েন করেছি। এছাড়া, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা হচ্ছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হল, পূজা চলাকালীন সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
ধামইরহাট পূজা উদযাপন কমিটির সম্পাদক শ্রী রামজনম রবিদাস জানান, "এবার ধামইরহাটে ৩০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি মন্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা সম্পন্ন করার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মন্ডপগুলোতে আগত ভক্তদের সুবিধার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই উৎসব নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে এবং সবাই মায়ের আশীর্বাদ পাবেন।”
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শ্রী মহেশ পাল বলেন, “এবারের পূজায় ভিন্ন ধর্মের মানুষও ভিড় করছেন। এটি আমাদের সমাজের একতা ও সম্প্রীতির প্রতীক। পূজার সময় সবাই একত্রিত হয়ে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আনন্দে অংশগ্রহণ করছে, যা আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।”
এছাড়া, টি এন্ড টি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের উপদেষ্টা সুশীল চন্দ্র মহন্ত বলেন, “আমরা সবাই মিলে এই পূজাকে একত্রে উদযাপন করছি। এটি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এখানে সাংস্কৃতিক বিনিময় হচ্ছে এবং প্রত্যেকে একে অপরের সহযোগিতা করছে।”
পূজা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় ঘট স্থাপন ও প্রতিমার অধিবাসের মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর রাত তিনটা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পূজা চলবে। রবিবার (১৩ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
পূজার পরিবেশ ও আয়োজনে গত বছরের তুলনায় এই বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ ভক্ত উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে, যা উৎসবের আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলছে। ধামইরহাটের মন্ডপগুলোতে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর দর্শনার্থীদের ঢল নামছে। প্রত্যেক মন্ডপে ভক্তদের জন্য খাবার ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ধামইরহাটের দুর্গোৎসব ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে এবছরও উদযাপিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের সকল অংশগ্রহণকারীরা আশাবাদী যে, এই পূজার মাধ্যমে মানবিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় থাকবে।
এবারের দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব হিসেবেই নয়, বরং সমাজের সকল মানুষের মধ্যে সম্পর্কের মেলবন্ধন গড়ার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে, যা ভবিষ্যতে আমাদের ঐক্যকে আরও দৃঢ় করবে।
No comments