নারায়ণগঞ্জের কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ডাকাতরূপী ০৪ ধর্ষককে আড়াই হাজার থেকে আটক করে র্যাব | N NEWS 24
ডেস্ক রিপোর্টারঃ
নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর কিশোরী গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ডাকাতরূপী ০৪ ধর্ষককে আড়াই হাজার থেকে আটক করে র্যাব র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে অদ্যাবধি জঙ্গি, মাদক, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, অপহরণকারী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও প্রতারকচক্র গ্রেফতারে সদা তৎপর রয়েছে।
এছাড়াও সা¤প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের মত নেক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের দ্রæততম সময়ের মধ্যে আটক করে আইনের আওতায় এনে সাধারণ জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে র্যাব।যেখানেই মানবাধিকার লুণ্ঠিত হয়েছে, নারী অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে বা নারী নির্যাতন/ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেছে, র্যাব তাৎক্ষণিক ভিকটিম অথবা নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদের দ্রত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।
আড়াইহাজার থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়,গত ১৫ মে ২০২৪ ইং রাত আনুমানিক ২ টা ৩০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন; যার মামলা নং-২৬ তারিখ ১৭ মে ২০২৪।
বর্ণিত গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১ এর একটি অভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের মূলপরিকল্পনাকারী ১। মোঃ আব্দুল্লাহ (২৪), পিতাঃ দেলোয়ার হোসেন, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও তার সহযোগী ২। মোঃ মতিন (৩৫), পিতাঃ মৃত মনসুর আলী, মাধবদী, নরসিংদী, ৩। চাঁন মিয়া (২৮), পিতাঃ আঃ রহিম মিয়া, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ৪। মোঃ আয়নাল (২৫), পিতাঃ মফিজ উদ্দিন, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ, ’দেরকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের মোবাইলসহ ০১টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান, ০১টি শাবল, ০১টি দা, ০২টি রামদা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত গণধর্ষণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ। এই চক্রে ১০/১২ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ এর নের্তৃত্বে তারা ১/২ বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা গত ১৫ মে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বাড়িতে যায়। সেসময় গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ ও গ্রেফতারকৃত মতিন ঘরের জানালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে।এসময় ভিকটিম ও তার মায়ের ঘুম ভেঙ্গে গেলে তারা ভয়ে চিৎকার করলে গ্রেফতারকৃতরা তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে।গ্রেফতারকৃতরা ঘরের দরজা খুলে দিলে গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ও গ্রেফতারকৃত আয়নালসহ অন্যান্য সহযোগীরা দেশিয় অস্ত্রসহ ঘরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের মা সহ ঘরে উপস্থিত সকলের হাত,পা ও মুখ বেধে ফেলে।
পরবর্তীতে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ডাকাত চক্রটি গড়ে তুলে। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জের ভ‚লতা-গাউসিয়া এলাকার বাসের হেলপার ও রিক্সা চালাত। গ্রেফতারকৃত মতিন গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহর অন্যতম সহযোগী। সে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে সিএনজি চালাত। সিএনজি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির জন্য টার্গেট নির্ধারণ করে ডাকাতির পরিকল্পনা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহকে প্রদান করতো। এছাড়াও সে তার সিএনজি দিয়ে ডাকাতির পূর্বে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ডাকাতির জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যেত এবং ডাকাতি শেষে চক্রের সদস্যদের সুবিধাজনক স্থানে দ্রæত পৌঁছে দিত। তার বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত ০৩টি মামলা রয়েছে।গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ও আয়নাল ডাকাত চক্রের অন্যতম সদস্য। তারা ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে যথাক্রমে বাস ও সিএনজি চালাত। তারা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহর নের্তৃত্বে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করতো। গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও চুরি সংক্রান্ত ০৩টি মামলা রয়েছে এবং এসকল মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আয়নাল এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংক্রান্ত ০১টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
No comments