যশোর শার্শায় এক যুবককে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় নির্যাতন চালিয়ে ষ্টাম্পে স্বাক্ষর | N NEWS 24
ডেস্ক রিপোর্টঃ
যশোর জেলার শার্শার নাভারন থেকে ইব্রাহীম (২৯) নামে এক যুবককে বন্ধুর বাড়িতে নেওয়ার কথা বলে ফুসলিয়ে তুলে নিয়ে ঝিকরগাছা ও বাঘারপাড়ায় আটকে রেখে বেদম মারপিট করে ১শ টাকার ৩টি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলে একাধিক সুত্র থেকে জানা যায়।
এ সময় ইব্রাহীমের কাছে থাকা সাড়ে ১৪ হাজার টাকা, ১৭ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ফোন ও একটি বিদেশি হাত ঘড়ি ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে নির্ভরযোগ্য সুত্র থেকে জানা যায়।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন ইব্রাহীমের বন্ধু ঝিকরগাছা পুরন্তপুর গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিকের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন, সুজন হোসেন(৪২), সুজনের ভাইরাভাই বাঘারপাড়া খাজুরা গ্রামের উজ্জল হোসেন(৪৫) ও সুজনের খালু বাঘারপাড়ার আইয়ুব আলী(৫০)। ভুক্তভোগি ইব্রাহীম শার্শার খাজুরা গ্রামের মো. আজিজুর রহমানের ছেলে।
বর্তমানে ভুক্তভোগী ইব্রাহীম এখন শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ইব্রাহীম জানান, গত ২৭ মে দুপুরে মালয়েশিয়া প্রবাসী বন্ধু ঝিকরগাছা পুরন্তপুর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন সুজন, তার ভাইরাভাই ও খালু নাভারন সাতক্ষীরা মোড়ে এসে বিভিন্ন কথা বলে ফুসলিয়ে একটি প্রাইভেটকারে করে ইব্রাহীমকে ঝিকরগাছায় নিয়ে বেদম মারপিট করেন। এরপর তারা ইব্রাহীমকে বাঘারপাড়া উপজেলার ছোটপোল বোলদেঘাটা গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে আরও ১২ -২০ জন মিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় ইব্রাহীমকে নির্যাতন করেন। ঘটনাস্থলেই ইব্রাহীম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর ইব্রাহীমের জ্ঞান ফিরলে বন্ধু সুজন বলেন, তোর সাথে আমার স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। তুই আমার সংসার ভেঙেছিস। আমি বিদেশ থেকে বাড়ি এসেছি। আমার স্ত্রী এখন আমার সাথে সংসার করতে চাইছে না। এখন এই কাবিনে স্বাক্ষর কর। তুই আমার স্ত্রীকে ৩ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেছিস। এখনি তোকে কাবিনের তিন লাখ টাকা পরিশোধ করে আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে হবে।
ভুক্তভোগি ইব্রাহীম আরও বলেন, এ সময় অভিযুক্তরা তার পিতা আজিজুর রহমানকে ফোন করে বলেন, তোমার ছেলে ইব্রাহীম অসুস্থ । সে বাঘারপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই খবর শুনে দ্রুত ইব্রাহীমের পিতা প্রাইভেটকার নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। দেখেন তার ছেলেকে আহত অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছে।
এ সময় স্থানীয় লোকজন অবস্থা বেগতিক দেখে সুজন ও তার লোকেরা জোর করে তিনটি খালি ১শ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে ইব্রাহীমকে ছেড়ে দেন। তখন ইব্রাহীমের পিতার আজিজুরের কাছে থাকা নগদ ৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
ইব্রাহীম আরও জানান, সুজনের স্ত্রীর সাথে কোন সম্পর্ক নেই। ইব্রাহীম সুজনের বিদেশ যাওয়ার সময় ব্যাংকের চেকের বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা ধার দিলে সেই টাকা চাওয়ায় তাকে পাওনা টাকা না দেওয়ার জন্য হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments